আয়ার সাথে ক্লিনিক মালিকের পরকীয়া-মামলা : সিলেটে তোলপাড়

সিলেট

আয়ার সাথে ক্লিনিক মালিক এক লন্ডন প্রবাসীর পরকীয়া প্রেম নিয়ে সিলেটে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ক্লিনিক মালিক ওই প্রবাসী ও তার পরকীয়া পলাতক রয়েছেন।
জানা গেছে নগরের শেখঘাটস্থ ‘সুখের হাসি ক্লিনিক’র মালিক ইংল্যান্ড প্রবাসী হাসান মাহমুদ মুকুল। তারই ক্লিনিকে কাজ করতেন ব্রাহ্মণ বাড়িয়ার বিলাল আহমদের স্ত্রী রোজিনা খাতুন লিমা। বিলাল ও লিমা দীর্ঘ ৭ বছর ধরে নগরের শেখঘাটস্থ শুভেচ্ছা ২৮৬ নং বাসায় ভাড়াটিয়া থাকতেন। তাদের সংসারে নুসরাত জাহান সাদিয়া নামে ৭বছর বয়সী এক কন্যা সন্তানও রয়েছে। এলকায় বসবাসের সুযোগে রোজিনা খাতুন লিমা শেখঘাটস্থ ‘সুখের হাসি ক্লিনিকে আয়ার কাজ নেন। পাশাপাশি ক্লিনিকের মালিক প্রবাসী হাসান মাহমুদ মুকুলের বাসায়ও গৃহ-পরিচারিকার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
এক পর্যায়ে ক্লিনিক মালিক প্রবাসী হাসান মাহমুদের সাথে গোপনে আয়া লিমার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি বিলাল তার সিলেটস্থ বাসায় স্ত্রী-কন্যা রেখে ব্যক্তিগত কাজে ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ নিজ বাড়িতে চলে যান। সেখানে কিছুদিন অবস্থানের পর হঠাৎ স্ত্রী রোজিনা খাতুন লিমা তাকে ফোন করে জানান, তার মেয়ে নুসরাত খুবই অসুস্থ এবং দ্রুত তার অপারেশন প্রয়োজন। এসময় অসুস্থতা ও অপারেশনের একটি নাটকীয় ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে তার কাছে চিকিৎসা ও অপারেশন বাবদ ৫০ হাজার টাকা চান। বিলাল তার একমাত্র কন্যার চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা তার শাশুড়ীর কাছে পাঠিয়ে দেন। এ কাজে রোজিনাকে সহযোগিতা করেন ক্লিনিকের স্টাফনার্স লক্ষ্মী রানী দাস। পরে বিলাল খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার মেয়ে কোনো প্রকার অসুস্থ ছিল না এবং তা মেয়ের কোনো অপারেশনও হয়নি। এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে রোজিনা খাতুন লিমা ক্লিনিকের মালিক হাসান মাহমুদ মুকুলের সাথে তার পরকীয়া সম্পর্কের কিছু ছবি বিলালের মোবাইল ফোনে পাঠায় এবং বিলালের বাসার ফ্রিজ খাটসহ সব মালালামাল এবং কন্যাসহ প্রতিবেশী রহিমা খাতুনের বাসায় চলে যায়। পরে বিল্লাল সিলেটে এসে তার বাসায় কিছু না পেয়ে রহিমার বাসায় গেলে তারা তাকে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।
এ ঘটনায় বিলাল আহমদ বাদী হয়ে সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রেপলিটন ম্যজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশা মামলা (নং ১২৮৯/২০২২) দায়ের করেন। শুনানী শেষে আদালত মামলাটি রেকর্ডের জন্য সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মামলাটি রেকর্ডে নেন কোতোয়ালির ওসি মুহাম্মদ আলী মাহমুদ। যা থানার মামলা নং ৪৫(৯)২২।
মামলার আসামীরা হচ্ছেন-বিলালের স্ত্রী সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের করইডরি গ্রামের নায়েব আলীর মেয়ে পরকীয়া রোজিনা খাতুন লিমা, সুখের হাসি ক্লিনিকের মালিক নগরের শেখঘাট শুভেচ্ছা ৩৬০-এর শফিক মাহমুদের পুত্র ইংল্যান্ড প্রবাসী পরকীয়া প্রেমিক হাসান মাহমুদ মুকুল, নগরের শেখঘাটের হাবিব হোসেন ও হাবিব হোসেনের স্ত্রী রহিমা বেগম এবং শেখঘাটস্থ সুখের হাসি ক্লিনিকের স্টাফনার্স লক্ষ্মী রানী দাস।
মামলা দায়েরের পর থেকে ইংল্যান্ড প্রবাসী হাসান মাহমুদ মুকুল ও তার পরকীয়া রোজিনাসহ সকল আসামী পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই যতন চন্দ্র পাল।
সিলেটে কোতোলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী মাহমুদ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলার পর থেকে আসামীরা আত্মগোপনে চলে গেছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের তল্লাশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *